রামগতি উপজেলা (আয়তন: ২৯১.৮২ বর্গ কিমি। অবস্থান: ২২°৯০´ থেকে ২২°৫২´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯০°৪৭´ থেকে ৯১°০১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ। সীমানা: উত্তরে কমলনগর উপজেলা, দক্ষিণে মেঘনা নদী ও হাতিয়া উপজেলা, পূর্বে সুবর্ণচর উপজেলা, পশ্চিমে মেঘনা নদী, দৌলতখান ও তজমুদ্দিন উপজেলা।
জনসংখ্যা ২২৯১৫৩; পুরুষ ১১৭৭১৫, মহিলা ১১১৪৩৮। মুসলিম ২১৭২৬৭, হিন্দু ১১৮৬৪ এবং অন্যান্য ২২।

জলাশয় প্রধান নদী: মেঘনা।
প্রশাসন রামগতি থানা গঠিত হয় ১৮৬২ সালে এবং থানাকে উপজেলায় রূপান্তর করা হয় ১৯৮৩ সালে।
তথ্যঃ

রামগতি উপজেলা আদমশুমারি রিপোর্ট ২০০১,
প্রাচীন নিদর্শনাদি ও প্রত্নসম্পদ বেদারবক্স মসজিদ, রানী ভবানী কামদা মঠ।
মুক্তিযুদ্ধের ঘটনাবলি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে জমিদার হাটের বাঁকে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের এক লড়াইয়ে কয়েকজন রাজাকারসহ ১৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ ১০৫, মন্দির ১০, মঠ ১। উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান: রামগতি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, চর পোড়াগাছা মসজিদ, বেদারবক্স মসজিদ, বুড়া কর্তার আশ্রম, রানী ভবানী কামদা মঠ।
শিক্ষার হার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড় হার ২৯.৫%; পুরুষ ৩১.৯%, মহিলা ২৭.০%। কলেজ ৪, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২৭, প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৫, মাদ্রাসা ৪৬। উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: আলেকজান্ডার সরকারি কলেজ (১৯৭০), রামগতি আহমদিয়া কলেজ (১৯৮৩), আব্দুল হাদী কলেজ, টাউন আলেকজান্ডার মহিলা কলেজ, এএসএম আব্দুর রব সরকারী কলেজ, রামগতি বি বি কে পাইলট আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩৩), চরসীতা তোরাব আলী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৭), রামগতি আছিয়া পাইলট বালিকা বিদ্যালয় (১৯৬৮), আলেকজান্ডার পাইলট বালিকা বিদ্যালয় (১৯৭২), বালুরচর ইসলামিয়া সিনিয়র (আলিম) মাদ্রাসা (১৯৩৩), চর আলেকজান্ডার আলিয়া মাদ্রাসা (১৯৩৮)।

পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকী মাসিক: রামগতি দর্পণ, স্বদেশ ভূমি।
সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরি ৪, ক্লাব ১২, মহিলা সংগঠন ২৩, নাট্যগোষ্ঠী ৩, সিনেমা হল ৩।
জনগোষ্ঠীর আয়ের প্রধান উৎস কৃষি ৬৬.৫৬%, অকৃষি শ্রমিক ৪.০০%, শিল্প ০.৫৩% ব্যবসা ১১.২৫%, চাকরি ৪.৫৮%, যোগাযোগ ও পরিবহণ ১.৫৩%, নির্মাণ ০.৮১%, ধর্মীয় সেবা ০.৩১%, রেন্ট এন্ড রেমিটেন্স ০.৩১% এবং অন্যান্য ১০.১২%।
কৃষিভূমির মালিকানা ভূমিমালিক ৪৮.৮১%, ভূমিহীন ৫১.১৯%। শহরে ৪০.১০% এবং গ্রামে ৫০.৪১% পরিবারের কৃষিজমি রয়েছে।
প্রধান কৃষি ফসল ধান, গম, মরিচ, পিঁয়াজ, সয়াবিন, চীনাবাদাম।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় ফসলাদি কাউন, যব, পাট।
প্রধান ফল-ফলাদি আম, কাঁঠাল, পেয়ারা, নারিকেল, সুপারি।
মৎস্য, গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির খামার মৎস্য ৫৮, গবাদিপশু ৯, হাঁস-মুরগি ৪০।
যোগাযোগ বিশেষত্ব পাকারাস্তা ৭০.৭৯ কিমি, আধা-পাকারাস্তা ২৩ কিমি, কাঁচারাস্তা ২৯০ কিমি।
বিলুপ্ত বা বিলুপ্তপ্রায় সনাতন বাহন পাল্কি, গরুর গাড়ি।
শিল্প ও কলকারখানা রাইস মিল, ফ্লাওয়ার মিল, স’মিল, আইসক্রিম ফ্যাক্টরি, বিড়ি ফ্যাক্টরি।
কুটিরশিল্প স্বর্ণশিল্প, তাঁতশিল্প, লৌহশিল্প, বাঁশের কাজ, কাঠের কাজ।

হাটবাজার ও মেলা হাটবাজার ৫০, মেলা ২। আলেকজান্ডার হাট, রামগতি হাট, করুণানগর হাট, জমিদার হাট, বিবির হাট, করইতলা হাট, সিন্নির হাট এবং আলেকজান্ডার বুড়া কর্তার মেলা উল্লেখযোগ্য।
প্রধান রপ্তানিদ্রব্য ইলিশ মাছ, চিংড়ি, ধান, চীনাবাদাম, সয়াবিন, মরিচ।
বিদ্যুৎ ব্যবহার এ উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন পল্লিবিদ্যুতায়ন কর্মসূচির আওতাধীন। তবে ৬.০৮% পরিবারের বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে।
পানীয় জলের উৎস নলকূপ ৭৫.৮৪%, পুকুর ১৩.৯২%, ট্যাপ ০.৮৩% এবং অন্যান্য ৯.৪১%।

স্যানিটেশন ব্যবস্থা এ উপজেলায় ২১.৭২% (গ্রামে ১৯.৫৭% এবং শহরে ৩৩.৪৭%) এবং ৬৩.২৪% (গ্রামে ৬৪.৭৪% এবং শহরে ৫৫.০৫%) পরিবার অস্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন ব্যবহার করে। ১৫.০৪% পরিবারের কোনো ল্যাট্রিন সুবিধা নেই।
স্বাস্থ্যকেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ১, উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ২, পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র ৯, ক্লিনিক ২।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ১৯৭০ সালের ১১ নভেম্বর প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে এ উপজেলার লক্ষাধিক লোক প্রাণ হারায়, কয়েক লক্ষ গবাদিপশু মারা যায় এবং বিপুল সম্পদ বিনষ্ট হয়।
আরও দেখুনঃ
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা | নোয়া-খালী জেলা | চট্টগ্রাম বিভাগ | বাংলাদেশ
