লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাহত

ফেরি বিকল ও নাব্যতা সংকটের কারণে লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মেঘনা নদীর ডুবোচরে আটকা পড়ে থাকতে হয় ফেরি ও লঞ্চসহ যাত্রীদের। তবে বিআইডব্লিওটিসির কর্মকর্তা বলছেন, জোয়ার-ভাটার দিকে তাকিয়েই ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। ঠিকমতো ড্রেজিং না হওয়ার কারণে এই সমস্যা হয়েছে।

 

লক্ষ্মীপুর-ভোলা নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল ব্যাহত

 

বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ ২১ জেলার মানুষ লক্ষ্মীপুর-ভোলা ও বরিশাল এই নৌরুট দিয়ে যাতায়াত করছে। লক্ষ্মীপুর-ভোলা এই নৌরুটে ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে তিনটি ফেরি নিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটটি চালু করে সরকার। বর্তমানে কলমিলতা, সুফিয়া কামাল, কনক চাপা, কিষানী ও কাবরীসহ পাঁচটি ফেরি ও ১৫টি লঞ্চ চলাচল করছে।

 

 

বিআইডব্লিউটিএ আরও জানায়, গত ১৫ দিন আগে কনকচাপা নামে ফেরিটি বিকল হলেও এখনও মেরামত হয়নি। মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটের এক কিলোমিটার দূরে রহমতখালী চ্যানেল। কিন্তু এই চ্যানেলে জেগে উঠেছে বিশাল এক ডুবোচর। এ ছাড়া এই নৌ-রুটের বিভিন্ন স্থানে আরও ২০ থেকে ২৫টি নতুন নতুন ডুবোচর জেগে উঠেছে। এসব জায়গায় ভাটার সময় থাকে কোমর পরিমাণ পানি।

এতে করে প্রতিদিন চার থেকে আট ঘণ্টা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের পণ্যবাহীসহ যানবাহন ও যাত্রী নিয়ে ফেরি ও লঞ্চ ডুবোচরে আটকে থাকতে হয়। জোয়ার এলেই নদীতে কিছুটা পানি বাড়ে। এরপর ফেরি ও লঞ্চ চলাচল শুরু হয়।

গত ১ মাস ধরে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এ নৌরুটে চলাচলকারী যাত্রীদের। সঠিক সময়ে গন্তব্যে ফেরি ও লঞ্চ না পৌঁছানোয় দুই পাড়ে দিনের পর দিন আটকা পড়ে পণ্যবাহী ট্রাক। এই কারণে ট্রাকে কাঁচামাল ও বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

ভোলার যাত্রী রহিম উদ্দিন জানান, প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিং করা হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। সঠিক তদারকি না থাকায় এবং ভালোভাবে ড্রেজিং না করায় নতুন নতুন ডুবোচর জেগে উঠছে। এই কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডুবোচরে আটকে থাকতে হয়। পরিবহন চালক আবুল জানান, প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী ও দুইশ এর বেশি পণ্যবাহী ট্রাক ও বাস পারাপার হচ্ছে। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের।

ফেরির মাস্টার শহিদুল ইসলাম বলেন, চ্যানেলের মুখ সরু হয়ে যাওয়ায় ফেরি চলাচল বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফগ লাইট না থাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে সামান্য কুয়াশা থাকলেও মাঝ নদীতে ফেরি নোঙর করতে বাধ্য হয়। ফলে দুপাড়ে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে আটকে থাকতে হচ্ছে দিনের পর দিন। এ ছাড়া নদীর বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুন চর জেগে উঠেছে। এই কারণে জোয়ার-ভাটার ওপর নির্ভর করে ফেরি চলাচল করতে হয়।

 

 

বিআইডাব্লিওটিসির মজুচৌধুরীরহাট মো. আতিকুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, জোয়ার-ভাটার দিকে তাকিয়েই ফেরি ও লঞ্চ ছাড়তে হয়। ঠিকমতো ড্রেজিং না হওয়ার কারণেই এই সমস্যা। ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের কর্মকর্তা মো. কাউছার বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত সমস্যা সমাধানের আশাবাদী।

 

আরও পড়ুন:

Leave a Comment